চাঁদপুরে নদীপথে আবারো সক্রিয় চোরাকারবারি চক্র

চাঁদপুরে নদীপথে আবারো সক্রিয় চোরাকারবারি চক্র

স্টাফ রিপোর্টার :
চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে চোরকারবারী চক্ররা। প্রতিদিন রাতের আঁধারে লাইটার জাহাজ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার মাল চোরাই ভাবে ক্রয় করে অনত্র পাচার করছে।

নদীপথে রাতের আঁধারে চট্রগ্রাম থেকে আসা জাহাজ ঢাকা যাওয়ার পথেই চোরা কারবারির সিন্ডিকেট দল চিনি, সার, ভূট্রা, গম, সোয়াবিন তেল ও কিলিংঙ্কারসহ বিভিন্ন বিদেশী পন্য জাহাজের স্টাফদের কাছ থেকে ক্রয় করে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে করে রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার এবং পণ্যের মালিকরা নিদিষ্ট পরিমানের চেয়ে মালামাল কম পাচ্ছে।

কয়েকটি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানা যায়, গত ৮/১০ বছর এসব চোরাকারবারিরা কিছুটা নিরব থাকলেও এখন আবার নতুন করে তারা চোরাই কাজে লিপ্ত হচ্ছেন। চাঁদপুর জেলার চোরা কারবারিরা রাতের আঁধারে নদীপথে চোরাই কাজ করে সে সময় লাখ ও কোটি টাকার মালিক হয়ে বাড়ি-গাড়ি করে অন্য ব্যবসায় চলে গেছে। কিন্তু সে সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিরবতা এবং বিএনপি সমর্থিত সরকারের এমপি ও মন্ত্রীদের ছত্র ছায়ায় তারা এসব কাজ করে গেছে।

সম্প্রতি চোরা কারবারির সাথে জড়িত থাকায় সাবেক যুবদল নেতা খায়ের ভূঁইয়া ও সেলিমের নামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও কর্তৃপক্ষ কোন নজর না দেওয়ায় তাদের কাজ কর্ম থেমে থাকেনি।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বর্তমান চাঁদপুর, শরিয়াতপুর ও মুন্সিগঞ্জের বাজারে চোরাই মাল ছাপলাই দিয়ে এখন এরা বড় বিটার হয়ে লাখ লাখ টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন।  এদের মধ্যে রয়েছে চাঁদপুর পুরানবাজার পূর্ব শ্রীরামদী ঢালী বাড়ির আব্দুল লতিফ ঢালীর ছেলে মো. মিজান ঢালী, রহমান ঢালীর ছেলে মোঃ মিন্টু ঢালী, পুরানবাজার মোম ফ্যাক্টরী এলাকার ফজল প্রধানিয়া, যমুনা রোডের ইউছুফ আলী, কালিবাড়ি ভূঁইয়া বীগ বাজার দোকানের মালিক খায়ের ভূঁইয়া, স্ট্যান্ড রোডের বাসিন্দা মরু হাজীসহ তাদের আরেকজন সহযোগী।
এদের মধ্যে মিজান ঢালী ও মিন্টু ঢালী এরা দুই জন চট্রগ্রাম থেকে জাহাজ করে আসা কন্টিনার জাহাজ থেকে ফতুল্লা এলাকায় চোরাই মালামাল কিনার সময় পুলিশের হাতে আটক হয় এবং চোরাই মাল কিনার অপরাধে গত চলতি বছরের ১৩জানুয়ারী তাদের বিরুদ্বে মামলা দায়ের হয়, মামলা নং)। ৩৮ ধারা ৩৭৯ – ৩৪ পেন্যাল, সেই মামলায় এরা দুই জনই ১৩ দিন কারা ভোগ করেছেন কেরানীগঞ্জ কারাগারে। সে সময় পুলিশ তাদের বিরুদ্বে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে বলেও তথ্য রয়েছে।

জানা যায়, আটকের সময় এরা কন্টিনার জাহাজ থেকে বিদেশী স্প্রে, অটো বাইকের মটর পার্সসহ বিদেশী সেম্পু বিদেশী কাপড়, চোরাই পথে কিনতে গিয়ে হাতে নাতে আটক হয়। বর্তমানেও মামলাটি আদালতে চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।

এর পড়েও থেমে থাকেনি তাদের এমন চোরাই কর্মকান্ড। বেশ কিছুদিন পূর্বেও গভীর রাতে মেঘনা নদীর মোহনার ত্রিমুখী পশ্চিম পাড় এলাকা থেকে রাত দুই টার সময় আনুমানিক ১২ লাখ টাকার গম জাহাজ থেকে চোরাই পথে আমদানী করেছে বলেও তথ্য রয়েছে। এছাড়া এমন কোন সপ্তাহ বাদ নেই যে তারা চট্রগ্রাম থেকে আসা জাহাজ থেকে চিনি, স্যার, ভূট্রা, গম, তেল চুরি না করে থাকেন। যে সপ্তাহে রবিবার, মঙ্গলবার, বৃহস্পতিবার এই তিন রাতে যে কোন দিন সুযোগ বুঝে এরা চোরা কারবারি করে থাকে বলে জানা যায়।

এদিকে চোরা কারবারিদের গড ফাদার মিজান, মিন্টু, মঞ্জিল, তাদের ক্ষমতা দেখিয়ে জেলা জুড়ে চোরাই পন্য গুলি পাচার করছে বলে জানাযায়।  গত দুইদিন পূর্বে চট্টগ্রাম থেকে আসা একটি লাইটার জাহাজ আনন্দবাজার এলাকায় নঙ্গর করলে যমুনা রোডের ইউসুফ আলী বেপারী বাংলা পেট্রোল পাচার করার সময় খবর পেয়ে চাঁদপুর কোস্টগার্ড তাদেরকে ধাওয়া করে। কোস্টগার্ডের ধাওয়া খেয়ে অবশেষে চাঁদপুর আলু বাজার এলাকায় বিআইডব্লিউটির বালু খননকারী ড্রেজার থেকে ১৫ ব্যারেল ডিজেল চোরাই ভাবে নিয়ে শাহিনের স্টিল বডি ট্রলার দিয়ে শরীয়তপুর পাচার করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

চাঁদপুর জেলার থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা অনুসন্ধান করলে তা সবকিছু সততা ও প্রমাণ বেরিয়ে আসবে। কিন্তু তারা চতুর বলে অনেকেই তাদের খুঁজে বের করতে পাড়ছে না, কারণ তাদের নিজিশ্ব ঠিকানা থাকলেও তারা ঠিকানা বিহিন বসবাস করে। তবে মেঘনা নদীতে প্রশাসন দৃষ্টি রাখলে এই সব চোরা কারবারিদের আটক করা সম্ভব হবে। নদীতে চোরাকারবারি প্রতিহত করতে হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ প্রশানের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *