বিএলএফ কমান্ডার অ্যাড. আ. মমিন খান মাখন নিজ বাড়িতে চিরনিদ্রায় শায়িত

অ্যাড. আ. মমিন খান মাখন নিজ বাড়িতে চিরনিদ্রায় শায়িত

স্টাফ রিপোর্টার :
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য, চাঁদপুর মহকুমা দক্ষিণ অঞ্চলীয় বিএলএফ কমান্ডার ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুুুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবদুল মমিন খান মাখন তাঁর গ্রামের বাড়িতে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন।

২২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করার পর পারিবারিক কবরস্থান পুরাণবাজার রঘুনাথপুরের জাফর খান বাড়িতে তাঁর বাবা-মায়ের পাশেই সমাহিত করা হয়েছে।

ঢাকা ন্যাশনাল ইনিস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি…….রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৮১ বছর। তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তানসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব এবং বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।  এসব তথ্য গণমাধ্যমকর্মীদের নিশ্চিত করেন অ্যাডভোকেট আবদুল মমিন খান মাখনের ভাতিজা নাঈম এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যাংকার মুজিবুর রহমান।

মাগরিবের নামাজের পর চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের চিশতিয়া জামে মসজিদ সম্মুখে অ্যাড. আ. মমিন খানের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এ সময় তাঁর মরদেহের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও জাতির এই বীর সন্তানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

জানাজাপূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, পৌর মেয়র অ্যাড. মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ মোঃ জহিরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডঃ মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, জেলা গণফোরাম সভাপতি অ্যাডঃ সেলিম আকবর, বিএলএফ কমান্ডার (ফরিদগঞ্জ) হানিফ পাটোয়ারী প্রমুখ।

মরহুমের জন্যে দোয়া চেয়ে বক্তব্য রাখেন তার মেয়ের জামাতা। আলোচনা পর্ব পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবু নাসের বাচ্চু পাটোয়ারী। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন চিশতিয়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা হাবিবুল্লাহ।

এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনির আহমেদ, রফিক উল্লাহ, সানাউল্লাহ খান, ব্যাংকার মুজিবুর রহমান, অজিত সাহা, প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশাসহ মরহুমের সকল পর্যায়ের আত্মীয়স্বজন, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সামাজিক সংগঠন এবং পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লিা জানাজায় উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁর প্রামের বাড়ি চাঁদপুর পৌর ৫নং ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর জাফর খান বাড়িতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

অ্যাড. মমিন খান মাখনের পিতার নাম মৃত ইউসুফ খান এবং তাঁর স্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সাহিদা বেগম ডলি এবং ছেলে রনি কানাডা প্রবাসী। অ্যাড. মমিন খান মাখন পুরাণবাজারের ব্যবসায়ী লুৎফুর রহমান খানের ছোট ভাই।

বীর মুুুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মমিন খান মাখনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল। এক শোকবার্তায় আওয়ামী লীগের পক্ষে তাঁরা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ মমিন খান মাখন আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিতপ্রাণ, সৎ, নিষ্ঠাবান, স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন চাঁদপুর মহকুমা বিএলএফ (মুজিববাহিনী) অধিনায়ক ছিলেন আব্দুল মমিন খান মাখন। তিনি ১৯৬০ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ চাঁদপুর মহকুমা কমিটির প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি আওয়ামী যুবলীগ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। আমরা মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। মহান আল্লাহ তাঁকে জান্নাতবাসী করুক এই প্রার্থনা করছি।

উল্লেখ্য, কিংবদন্তি এই মুক্তিযোদ্ধা চাঁদপুরের স্বাধীনতা-পূর্বকালের সাহসী ছাত্রনেতা, বলিষ্ঠ নিবেদিতপ্রাণ ছাত্র সংগঠক, রাজনীতির সৎ সাহসী প্রবাদপুরুষ, অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর ছিলেন। তিনি চাঁদপুর সদর আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে দুবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে চাঁদপুরে সকল মহলে গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে।

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *